এবার অস্বাভাবিকভাবে বেঁকে গেছে দুটি লাইন। দেখলে মনে হতে পারে যেন বড় ঝড় বয়ে গেছে, লোহার এই শক্ত পাতের ওপর দিয়ে। শুধু কি তাই! কোথাও রেললাইনের পাশ থেকে সরে গেছে পাথর আর মাটি। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পাহাড়ি ঢল আর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় এভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের নতুন রেললাইনে।
সাতকানিয়া অংশে তিন কিলোমিটার জুড়ে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কেওচিয়ার তেমুহনী এলাকায়। সেখানে এক কিলোমিটার এলাকায় বেঁকে গেছে লাইন। উদ্বোধনের আগেই রেললাইন এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিকল্পনা আর নির্মাণকাজ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এ অবস্থায় আগামী সেপ্টেম্বরে ট্রেন চলাচল শুরু নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবেচনা করা হয়নি ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান। পাহাড়ি ঢলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইনটি। বুয়েট পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এম শামসুল হক জানান, ইন্ডিয়াতে করা হল এলিভেটেট আমরা করলাম মাটিতে। এর নেতিবাচক প্রভাব শুধু যে পরিবেশের ওপর পড়ছে তা নয় এর প্রভাব পানি নিষ্কাশনে পড়ছে। এটা যদি আমরা খুঁটির ওপর করি তাহলে এর নিচ দিয়ে পানিও যেতে পারবে, হাতিও যেতে পারবে, মানুষও যেতে পারবে।
রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ট্রেন চলাচল শুরু নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। তবে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, দ্রুতই মেরামত হবে ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, মাটি সরে যাওয়ায় কোথাও কোথাও রেললাইন একটু বেসে গিয়েছে। আশা করছি আগামী সেপ্টম্বরে এটা সংস্কার করে অক্টোবরে এটা চালু করতে পারব।
এদিকে প্রকল্পে বন্যায় মোট ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে বলেও জানায় রেলকর্তৃপক্ষ। দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একশো কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে এ পর্যন্ত শেষ হয়েছে ৮৮ ভাগ কাজ। প্রকল্প ব্যয় ১৫ হাজার কোটি টাকা।